
যুক্ত মনোজিৎ মিশ্রর বিরুদ্ধে শহরের থানায় থানায় অভিযোগ। কখনও শ্লীলতাহানি, কখনও দাদাগিরি, কখনও সিভিক ভলান্টিয়ারকে চড়! নিজের কার্যকলাপের জন্য় একসময় কলেজ থেকে রাস্টিকেটও করা হয়েছিল! অথচ তারপরও সেই মনোজিৎ মিশ্রই সাউথ ক্য়ালকাটা ল কলেজে অস্থায়ী কর্মীর চাকরি পেয়ে গেছিলেন! অর্থাৎ একটা বিষয় স্পষ্ট তাঁর মাথায় প্রভাবশালীদের হাত ছিল! এই প্রেক্ষাপটেই গণধর্ষণকাণ্ডের তদন্তে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য়! কলেজ ছাত্রী থেকে কলেজের অধ্যাপক, সকলেই তাঁর ভয়ে কাঁটা। এই বোধ হয় ‘যন্তর-মন্তরে’ ডেকে পাঠান। তারপর কী হয় কে জানে ! কলেজ কর্তৃপক্ষ, কসবা থানা, পুলিশ, প্রশাসন, অভিযোগ, এসব কে থোরাই কেয়ার করতেন কসবাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত প্রাক্তন TMCP নেতা ও বর্তমানে তৃণমূল কর্মী মনোজিৎ মিশ্র।
এক ছাত্রী (নাম ও পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানালেন, ‘ইউনিয়ন রুমের চাবি তার কাছেই থাকত। গার্ডরুমে গার্ডই ঢুকত না। ইউনিয়ন রুমে আয়। এটা খুব একটা কমন থ্রেট হয়ে গেছিল যে ইউনিয়ন রুমে আয়। ওই ইউনিয়নরুমে ঢোকানোর পরে কার সাথে কী কথা বলা হবে, কার গালের উপরে কটা থাপ্পড় মারা হবে বা কতভাবে তাকে হেনস্তা করা হবে বা মলেস্ট করা হবে, সেগুলোর কোনও রেকর্ড থাকত না।’
সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে মৌরসিপাট্টা চালাতেন মনোজিৎ মিশ্র! আর ইউনিয়ন রুমই ছিল মনোজিতের যন্তরমন্তর ঘর! এমনই অভিযোগ করলেন সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজেরই আরেক ছাত্রী। তাঁর আরও অভিযোগ, কলেজের মধ্যে স্টুডেন্ট হিসাবে দেওয়া ব্যক্তিগত ইনফরমেশন, বাবা মায়ের ফোন নম্বর থেকে রেসিডেনশিয়াল ডিটেলস, সব পৌঁছে যেত মনোজিতের কাছে। সেটা কী সম্ভব কলেজের মদত না থাকলে? প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
এদিকে কসবার ‘গণধর্ষণকাণ্ডে’ তদন্ত এগোচ্ছে অতি দ্রুত। সূত্রের খবর, কসবার এই গণধর্ষণকাণ্ডে পুলিশের স্ক্যানারে রয়েছেন আইন কলেজের ১৬ জন পড়ুয়া। CC ক্যামেরার ফুটেজ থেকে ওই পড়ুয়াদের চিহ্নিত করা হয়। তাঁদের সম্পর্কে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছিল। এই ১৬ জন পড়ুয়াকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, মনোজিতের কল ডিটেলস দেখে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ঘটনার রাত থেকে পরের দিন গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত কার কার সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল। তা থেকেও মিলেছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য।