
বালুরঘাট, দক্ষিণ দিনাজপুর:
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার শিক্ষা পরিকাঠামোয় এক নতুন দিগন্তের সূচনা হল মঙ্গলবার। কেন্দ্র সরকারের বিদ্যাশক্তি প্রকল্পের আওতায়, এই জেলার তিনটি স্কুলে একযোগে চালু হল আইআইটি মাদ্রাজ পরিচালিত অত্যাধুনিক কোচিং সেন্টার। এই প্রকল্পের সূচনা পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে প্রথম, যা রাজ্যের জন্য একটি গর্বের মুহূর্ত বলেই মনে করছেন শিক্ষামহল।
বালুরঘাট ললিত মোহন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডঃ সুকান্ত মজুমদার। তাঁর উপস্থিতিতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি এক বিশেষ মাত্রা পায়। এদিনের অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইআইটি মাদ্রাজের ‘বিদ্যাশক্তি’ প্রকল্পের কনভেনর ডঃ শিবা সুব্রামানিয়াম, ললিত মোহন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পার্থ প্রতিম দত্ত, জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিবৃন্দ, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্রছাত্রীরা।
যে তিনটি স্কুলে শুরু হলো এই প্রকল্প:
- বালুরঘাট ললিত মোহন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়
- গঙ্গারামপুর চিত্তরঞ্জন প্রাইভেট স্কুল
- বুনিয়াদপুর হাই স্কুল
কী এই বিদ্যাশক্তি প্রকল্প?
বিদ্যাশক্তি প্রকল্প হল কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষা মন্ত্রকের একটি বিশেষ উদ্যোগ, যা দেশের পিছিয়ে পড়া জেলাগুলিতে গুণগত শিক্ষা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে। আইআইটি মাদ্রাজের প্রযুক্তিগত সহায়তায় এই প্রকল্পে আধুনিক স্মার্ট ক্লাসরুম, ভিডিও লেকচার, লাইভ কোচিং এবং ডিজিটাল রিসোর্সের মাধ্যমে পড়ুয়াদের প্রস্তুত করা হবে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য।
উদ্দেশ্য ও সম্ভাবনা:
এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হল গ্রামীণ ও আধা-নগর অঞ্চলের ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার মূল স্রোতে আনা এবং আইআইটি, নিট, জেইই-এর মতো পরীক্ষার জন্য মানসম্মত প্রস্তুতি দেওয়া। দক্ষিণ দিনাজপুরের মতো সীমান্তবর্তী জেলায় এই প্রকল্প শুরু হওয়া যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। দীর্ঘদিন ধরে এখানকার পড়ুয়ারা শহুরে সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল। বিদ্যাশক্তি প্রকল্প সেই ফাঁক পূরণের চেষ্টা করবে।
ড. সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য:
“এই প্রকল্প শুধুমাত্র কোচিং নয়, এটা একটি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। আমরা চাই প্রত্যন্ত জেলার ছাত্রছাত্রীরাও যেন সমান সুযোগ পায়। বিদ্যাশক্তি প্রকল্প সেই সম্ভাবনার দরজা খুলে দেবে।”
স্থানীয় প্রতিক্রিয়া:
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, অভিভাবক এবং ছাত্রছাত্রীরা এই উদ্যোগে অত্যন্ত খুশি। অনেকেই জানিয়েছেন, এতদিন শহরের বাইরে বসে ভালো কোচিং পাওয়া কঠিন ছিল। এখন সরকারি উদ্যোগেই সেই সুবিধা মিলবে নিজের স্কুলেই। ছাত্রছাত্রীদের কথায়—
“এই কোচিংয়ের মাধ্যমে আমাদের ভবিষ্যৎ তৈরি হবে। আমরা এখন অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী।”