
কলকাতা: রাজ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের সম্ভাবনা ক্রমেই জোরাল হচ্ছে। ২০১৭ সালের পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলিতে আর কোনও ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০২০ সালে। তবে কলকাতা হাইকোর্টের সাম্প্রতিক কড়া নির্দেশে রাজ্য সরকার ও শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস নড়েচড়ে বসেছে। আদালতের নির্দেশ, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ছাত্রভোট নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান জানাতে হবে রাজ্যকে।
সূত্রের খবর, চলতি বছরের শেষেই অনুষ্ঠিত হতে পারে বহু প্রতীক্ষিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন। সেই লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করেছে শাসক দলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি। রাজ্য নেতৃত্ব জেলাওয়ারি রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে। কলেজভিত্তিক ইউনিট পুনর্গঠন শুরু হয়েছে। আগামী ২৮ অগস্ট, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাদিবসের আগেই সমস্ত কলেজে নতুন ইউনিট গঠন সম্পন্ন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
বিশেষভাবে নজর দেওয়া হচ্ছে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়াদের নেতৃত্বে আনা এবং ছাত্রীদের সভাপতি করার বিষয়ে। তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়াদের ইউনিটের নেতৃত্বে রাখা হবে না বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, প্রত্যেক জেলায় একজন করে রাজ্য কমিটির অবজার্ভারও নিয়োগ করা হবে। জানা গিয়েছে, টিএমসিপির এই সংক্রান্ত স্টেটাস রিপোর্ট ইতিমধ্যেই দলীয় কার্যালয় ক্যামাক স্ট্রিটে পৌঁছে গিয়েছে।
সম্প্রতি কসবা আইন কলেজে গণধর্ষণের অভিযোগ সামনে আসায় কলেজ রাজনীতিতে ফের আলোড়ন তৈরি হয়। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সূত্রে খবর, সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে অভিযুক্তদের সরিয়ে দিয়ে নতুন নেতৃত্ব আনা হচ্ছে।
এ বিষয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, “আমি খুশি। ইউনিয়ন রুমের বাইরেও রাজনীতি করতে হবে—আমি সবসময় বলেছি। ছাত্রছাত্রীদের কাছে যাওয়া জরুরি। ভোট যেদিনই হোক, আমরা প্রস্তুত।”
অন্যদিকে বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা বলেন, “লোকদেখানো নির্বাচন হবে। আগে যেখানে অবৈধভাবে দখলদারি চলত, এবার সেটাই বৈধভাবে চলবে।”
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও তার অধীন কলেজগুলিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছিল। এরপর ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্সি এবং ২০২০ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন হয়। তারপর দীর্ঘ পাঁচ বছর কোনও ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি। এবার হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে সেই বন্ধ দুয়ার খুলতে চলেছে বলেই মত শিক্ষামহলের।