
দিনহাটা, কোচবিহার | ১ আগস্ট: দিনহাটার খারিজা ভূতকুরা গ্রামে কাঁটা নদী যেন আজও গলা টিপে ধরে রেখেছে শতাধিক শিশুর স্বপ্ন। নেই সেতু, নেই ভরসা -ভাঙা বাঁশ, কাঠ আর পাটকাঠির তৈরি ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোই স্কুলে পৌঁছানোর একমাত্র উপায়।
প্রতিদিন সেই বিপজ্জনক সাঁকো পার হয়ে গৌড় সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তে যায় বহু ছাত্রছাত্রী। বর্ষায় জল বেড়ে গেলে চলে ভেলার ব্যবহার, হাঁটু জলে হেঁটে সাইকেল কাঁধে নিয়ে নদী পার হচ্ছে কোমলমতি শিশুরা।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কন্যাশিক্ষা।
ঝুঁকির ভয়ে অনেকে মেয়েদের স্কুল থেকে তুলে নিচ্ছেন। সপ্তম বা অষ্টম শ্রেণিতেই বিয়ে দিয়ে দিচ্ছেন অনেক পরিবার। স্কুলছুট ও বাল্যবিবাহের হার ভয়াবহভাবে বাড়ছে।
স্থানীয়দের কণ্ঠে অসহায়তা:
মিলন বর্মন বলেন, “সাঁকো পার করতে গিয়ে আমার মেয়ে নদীতে পড়ে যায়। এরপর সাহস পাইনি। নাম কেটে দূরের গোসানিমারি গার্লস স্কুলে ভর্তি করি।”
অর্থনৈতিক সঙ্কট আর এক বড় বাধা:
সাঁকো পারাপারের জন্য ছাত্রপ্রতি প্রতিদিন ১০ টাকা করে নেওয়া হয়, অভিযোগ স্থানীয়দের। অনেক পরিবার এই টাকাও জোগাড় করতে পারেন না, ফলে শিশুরা বিদ্যালয়ে পৌঁছাতে পারে না।
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া:
জেলা পরিষদের সদস্যা শ্রাবণী ঝাঁ বলেন,
“নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে শিশুদের এই দুর্দশা চোখে পড়েছে। স্কুলব্যাগ মাথায় নিয়ে সাঁকো পার হতে দেখে হৃদয় ভারী হয়ে যায়। ইতিমধ্যেই বিষয়টি প্রশাসনের শীর্ষ মহলে তোলা হয়েছে। সেতু নির্মাণের দাবি গুরুত্বের সঙ্গেই বিবেচিত হচ্ছে।”