
পানিহাটি, ১৮ জুলাই: নিষেধ সত্ত্বেও জরাজীর্ণ বাড়িতে ঘুমিয়েছিলেন। গভীর রাতে সেই বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ায় মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। মৃতের নাম দেবকুমার শ্রিমানী। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটি পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডে, এমএন চট্টোপাধ্যায় রোডে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পুরনো বাড়িটিতে দেবকুমার ও তাঁর মেজদার পরিবার বসবাস করতেন। দেবকুমারের বড় ভাই আলাদা থাকেন। বাড়িটির অবস্থা দীর্ঘদিন ধরেই বিপজ্জনক ছিল। একাধিকবার প্রতিবেশী ও স্থানীয় কাউন্সিলর পরিবারটিকে বাড়ি খালি করার অনুরোধ করলেও তাঁরা সে কথা শোনেননি বলে অভিযোগ।
শুক্রবার গভীর রাত ২টো নাগাদ বাড়িটির একাংশ হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে। যে ঘরে দেবকুমার ঘুমোচ্ছিলেন, সেটি সম্পূর্ণ ধসে পড়ে এবং তিনি ইট-পাথরের নিচে চাপা পড়ে যান। শব্দ শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। খবর দেওয়া হয় খড়দহ থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করে। দেবকুমারকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পরিবারের দাবি:
মৃতের বৌদি ভারতী শ্রিমানী জানান, “রাতেই হঠাৎ বিকট আওয়াজ হয়। বাইরে বেরিয়ে দেখি বাড়ির একটা দিক ভেঙে পড়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই বুঝি, আমার দেওর চাপা পড়েছে।”
তিনি আরও জানান, “অনেক প্রোমোটার বাড়িটি নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ভাইয়ে ভাইয়ে মতানৈক্যের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি।”
প্রতিবেশী এবং প্রশাসনের বক্তব্য:
স্থানীয় বাসিন্দা দেবাশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, “বাড়িটি বসবাসের অযোগ্য ছিল। সকালে একবার বাড়ির একটা অংশ ভেঙেও পড়েছিল। তারপরও ওরা ঘর ছাড়েনি।”
পানিহাটি পুরসভার কাউন্সিলর ঝরনা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “আমরা বহুবার অনুরোধ করেছি ওখানে না থাকতে। শুক্রবার সকালেও বাড়িতে অস্বাভাবিক শব্দ হচ্ছিল বলে অনেকে সতর্ক করেছিল। কিন্তু উনি জোর করে ওই ঘরে ঘুমোতে গিয়েছিলেন।”
পুলিশ ও পুরসভার তরফে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। স্থানীয়দের প্রশ্ন, এই মৃত্যু কি অনিচ্ছাকৃত অবহেলার ফল?